প্রথম অধ্যায়
১.১ ভূমিকাঃ
বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সকল জনগণের যে কোন কাজে অংশগ্রহণ করার সমসান অধিকার রয়েছে। বাংলাদেশের মোট জনগণের অর্ধেক অংশই নারী। নারী হিেিসবেও সকল কাজে অংশগ্রহণ করার অধিকার পুরুষের মত সমান হওয়া উচিৎ। কিন্তু বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ তুলনামূলক বেশি হলেও বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ অতি সামান্যই। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধীদলীয় নেত্রী দু’জুনই নারী। তবুও বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ ঘটেছে বিভিন্ন আন্দোলন এবং সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে। অথচ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৪২ বছরের প্রায় অর্ধেক সমসয়ই নারী নেতুত্ব দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। সামরিক শাসন আমল বাদ দিলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় রাষ্ট্র পরিচালনায় নারীরা নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধীদলীয় নেত্রী নারী হওয়া স্বত্ত্বেও বাংলাদেমের রাজনীতির নারীর অংশ গ্রহণ যুবই সীমিত। ভোটাধিকার লাভ করেছে। বাংলাদেশ সংবিধানের ১০, ২৭, ২৮ (১),(২), (৩), (৪) এবং ২৯(১) নং ধারায় সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রত্যেকটি পর্যায় নারী পুরুষ সম-অধিকারের কথা বলা হলেও রাজনৈতিক অঙ্গনে নারীর প্রবশাধিকার অনেকটা রুদ্ধ। নানান প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে তাদের রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে। তাই বলা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ আজ পর্যন্ত পুরুষের তুলনায় অতি নগন্য।প্রকৃতপক্ষে কতজন নারী বাংলাদেশের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করেন তার সঠিক হিসাব আজ পর্যন্ত পাওয়া যায় না। তবে সাধারণভাবে নারীর রাজনীতিতে অংশগ্রহণের বিষয়টিকে বিভিন্নভাবে বিবেচনা করা যায়। একজন ভোটাার হিসেবে, রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসেবে স্থানীয় সরকার এবং জাতীয় নির্বাচনে অংশ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের নারীরা রাজনীতিতে অংশ গ্রহণ করতে পারেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একজন নারী উপরোক্ত মাধ্যমের। এক বা একাধিক মাধ্যম দিয়ে রাজনীতিতে অংশ গ্রহণ করতে পারেন। তবে কেই যদি রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত না হয়ে সরাসরি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তবে সেটি তার রাজনীতিতে অংশগ্রহণ। তেমনি কেউ যদি রাজনৈতিক দলের সাথে দীর্ঘদিন সম্পৃক্ত থেকে কোনদিনই নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করেন, তবে সেটিও তার রাজনীতিতে অংশগ্রহণ। এই বিষয়গুলিকে মানদন্ড হিসেবে ধরে বিবেচনা কররে দেশের মূল ধারার রাজনীতিতে নারীর প্রতিনিধিত্বে বিষয়টি সকলের নিকট স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নকল নাগরিক রাষ্ট্রীয় ও জনজীবনে সমান অধিকার লাভ করেছেন। আঠার বছর বয়সী সকল নারীর ও পুরুষ দেশের যে কোন নির্বাচনে ভোটার হতে এবং ভোট দিতে সক্ষম। রাষ্ট্রপতি পদে, স্পিকার পদে, জতায় সংসদের সদস্যপদে এবং মন্ত্রী পদে নির্বাচিত হবার সমান অধিকার প্রত্যেক নারীর রয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় নারীর রাজনৈতিক ক্ষতায়ন বলতে বুঝায় জাতয়ি সংসদে এবং মন্ত্রী পরিষদে অংশগ্রহণ এবং আইন প্রণয়ন ও সরকারী নিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্রিয় ও কার্যকর ক্ষমতা ও কৃতত্ব প্রয়োগ। বাংলাদেশের যষ্ঠ জাতয়ি সংসদ নির্বাচন থেকে আজ পর্যন্ত দু’জন নারী প্রধান মন্ত্রী এবং বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন, কিন্তু তবুও বাংলাদেশের নারী সমাজ রাজনৈতিক ক্ষমতাহীন। আজ পর্যন্ত কোন নারী রাস্ট্রপতি এবং স্পিকার জদে নিয়োগলাভ করেন। জাতয়ি সংসদ এবং মন্ত্রীপরিষদেও নারীর অংশগ্রহণ অত্যন্ত্য সীমিত্ আইন প্রণয়ন এবং সরকারিন সিদ্ধান্ত গ্রহণেও নারীর ক্ষমতা নেই বললেই চলে। তাছাড়া স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায়ও নারীর উপস্থীতি অতি নগন্য। তাই বলা যায়ম বাংলাদেেশর প্রদান দুটি রানৈতিক পদে নারীর উপস্তিতি স্বত্ত্বেও নারী রাজনৈতকি ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত।
১৯৭৩ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন সমূহে নারীর অংশগ্রহণ কিংবা বিজয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে প্রান্তিকতা লক্ষ্য করা যায়। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদে ৩০০ আসন সরাসরি নির্বাচনের জন্য এবার বিভিন্ন দল, জোট, মহাজোট এবং স্বতন্ত্র থেকে মোট ৬০ জন মহিলা ৬৩ আসন সরাসরি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দিকতা করার জন্য মনোনয়ন পাশ, যা কি না মোট প্রার্থীর ৩.৫ শতাংশ নির্বাচন ৬০ জন নারী প্রার্থী সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করান। এদের মধ্যে ২৩টি আসনে জয়লাভ করেন ১৯জন নারী। এ নির্বাজচন জামায়াতের কোন নারী প্রার্থী ছিল না। ২০০৮ সালের নির্বাচনে যেসব নারী প্রার্থীরা পরাজিত হন তারা অল্পসংখ্যক ভোটের ব্যবধানেই পরাজিত হন। উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে কোন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এত অল্প সংখ্যক মহিলা সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। এট অত্যন্ত ইতিবাচক একটি বিষয়।
১.২ বিষয়বস্তুর বর্ণনাঃ
আলোচ্য টার্ম পেপারে বাংলাদেশের নবম জাতয়ি সংসদ নির্বাচনে নারীর প্রতিনিধিত্ব এবং বাংরাদেশর রাজনীতিতে নারীর ক্ষমতায়ন উপর আলোপাত করা হয়েছে। বিভিন্ন তথ্য এবং উপাত্ত বিশ্লেষনের মাধ্যমে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারীর প্রতিনিধিত্ব এবং বাংলাদেশের নারীর অংশগ্রহণের সম্ভাবনা সম্পর্কে বিচার বিশ্লেষণ করা হয়েছে।আলোচ্য টার্ম পেপারে কিছু নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু সম্পর্কে আলাচনা করা হয়েছে। বিষয়বস্তুগুলো নি¤œ্রুপ-
১. নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে আলোচনা।
২. নমম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ।
৩. বিভিন্ন পর্যায় তথ্যের উপস্থাপন।
৪. নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ সমস্যা ও সমাধান্
৫. নারীর রাজনীতির সম্ভাবনা।
৬. নারীর রাজনৈতিক ক্ষতায়নের গতি প্রকৃতি।
আলোচ্য টার্ম পেপারের প্রধান বিষয়বস্তু হলো নারীর জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং নারীর ক্ষমতায়ন কি তার উপর আলোকপাত করা। নবম জাতীয় সংসদে নারীল প্রতিনিধিত্ব থেকেই নারীর ক্ষমতায়ন এবং রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। বাংলাদেশের প্রথম ১৯৭৩ সারে জাতয়ি সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয। ১৯৭৩ সালে নির্বাচন হয়েছে ৯টি। প্রথম দিকের নির্বাচনগুলোতে নারীর অংশগ্রহণ তেমন ছিলনা। তবে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে এবং প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব নারী আসায় বর্তমানে রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ আগের তুলনায় অনেক বেশি হলেও জাতীয় সংসদ নির্বচনে এবং জাতয়ি জীবনে নারীর ক্ষতায়নের গতিপ্রকৃতি খুব বেশি উন্নতি লাভ করতে পারেনি। নারীর সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বাড়লেও নবম জাতীয সংসদ নির্বানে নারীর প্রতিনিধিত্ব এবঙ নারীর রজনৈতিক বর্তমান গতিপ্রকৃতি খুর বেশি বৃদ্ধি পায়নি। তাই বলা যায়, বাংলাদেশের রাজনীতিততে আশানুরুপ নারীর প্রতিনিধিত্ব এবং ক্ষমতায়ন বিকশিত হয়নি। তাবে প্রধানমন্ত্রি এবং বিরোধী দলীয় নেত্রীসহ বাংলাদেশের সুশীল সমাজ নারীদের রাজনৈতিক অংশ গ্রহণের ক্ষেত্র ভূমিকা রাকতেপরে। প্রধান প্র্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনতন্ত্রে নারীর স্থায়ী আসন বৃদ্ধির মাধ্রমে এবং জাতি সংসদ নিবৃাচন ও মন্ত্রীপরিষদ নারীর আসন সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্রমে নারীর প্রতিনিধিত্ব এবং ক্ষমতায়নের গতিপ্রকৃতির উন্নয়ন ত্বরানি¦ত করা সম্ভব।
১.৩ টার্ম পেপারের উদ্দেশ্যঃ
আলোচ্য টার্ম পেপারের প্রধান বিষয় হলো নবম জাতীয সংসদ নির্বাচনে নারীর অংশগ্রহণ এবং বাংলাদেশে নারীর রাজনৈতিক ক্ষতায়নের গতিপ্রকৃতি। সতরাং একথা সহজেই বলা যায় যে, আলোচ্য গবেষণার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো, বাংলাদেশের সবম জাতয়ী সংসদ নির্বাচনে নারীর অংশগ্রহণ সম্পর্কে অবগত হওয়া এবং তাদের নবম জাতীয সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষিতে ক্ষমতায়নের ভবিষ্যৎ গতি প্রকৃতি সম্পর্কে জানাও গবেষনা পত্রের মূল উদ্দেশ্য। এছাড়া বাংলাদেশের নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রণের ক্ষেত্রে যেসকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করতে হয় এবং এসব বাধা বা সমস্যা দূরীকরনের উপায় সমূহ জানাও আলোচ্য টার্ম পেপারের উদ্দেশ্য এবং বিষয়ের মধ্যে পার। বাংলাদেশের নারীরদের নবম জাতয়ি সংসদ নির্বাচনে প্রতিনিধিত্ব এবং এই প্রতিনিধিত্বের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের নারীরদের রাজনৈতিক ক্ষতায়নের ভবিষ্যৎ গতি প্রকৃতি সম্পর্কে জানওি আলোচ্য টার্ম পেপারের উদ্দেশ্য হতে পারে। তাছাড়া টার্ম পেপারের মাধ্যমে বাংলাদেশের নারীর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ রুপরেখা নির্ণয় করতে আলোচ্য টার্ম পেপারের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।এছাড়াও উক্ত টার্ম পেপারের আরও কতগুলো উদ্দেশ্য রয়েছে। এই উদ্দেশ্য গুলো নি¤œরুপ-
১. নবম জাতীয় সংসদে নারীর অংশগ্রহণের বাস্তব অবস্থা অনুসন্ধান করা।
২. নবম জাতীয় সংসদে নারীর অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সমস্যাগুলো সনাক্ত করা।
৩. সমস্যাসমূহ থেকে উত্তরণের উপায় চিহ্নিত করাও ও সুপারিশ করা।
সুতরাং রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহন বৃদ্ধি করাই হচ্ছে এ টার্ম পেপারের প্রধান উদ্দেশ্য।
১.৪ সাহিত্য পর্যালোচনাঃ
যে কোন গবেষণা তৈরী করতে হলে সাহিত্য পর্যালোচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীর প্রতিনিধিত্ব সম্পর্কিত এ পর্যন্ত বহু গ্রন্থ রচিত হয়েছে। তাছাড়া বেশ কয়েনটি জার্নালে এ সম্পর্কিত লেখা প্রকশিত হয়েছে। এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য বইগুলো হলো-১. প্রফেসর ইয়াসমিন আহমেদঃ নারী ও রাজনীতি
২. রাখী বর্মন ঃ নারী ও রাজনীতি
৩. আলেয়া পারভীন ঃ নারী ও রাজনীতি
৪. অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান ও সামসুন্নাহার খানম মেরীঃ নারী ও রাজনীতি
৫. ড. মোঃ আব্দুল ওদুদ ভূইয়া: রাজনীতি ও উন্নয়ন নারী।
৬. মোঃ রফিকুল ইসলাম ঃ নারী ও রাজনীতি
উপরোক্ত গ্রন্থগুলোতে তাত্ত্বিক ধারণা ও গঠন কাঠামো, উদ্দেশ্য, বাংলাদেশের নবম জাতীয় সংসদে নারীর অংশগ্রহণ কেমন এ সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় যে, এই টার্ম পেপারের নবম জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব দূরীকরণের উপায় বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে আলোচনা করা হয়েছে।
১.৫ সাম্যের উৎসঃ
মাধ্যমিক উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে টার্ম পেপারটি সম্পন্ন করা হয়েছ্ েতথ্যের মাধ্যমিক উৎস হিসেবে নবম জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী নারী প্রতিনিধিত্বের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে গবেষণাটি সম্পন্ন করা হয়েছে।মাধ্যমিক তথ্যের উৎস হিসেবে বিভিন্ন এই, জার্নালে, সংবাদপত্র ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়েছে।
পূর্ণ টার্ম পেপারটি পেতে- এখানে ক্লিক করুন
0 comments:
Post a Comment