Tuesday, March 22, 2016

In the Development of Bangladesh Economy Foreign Remittance Takes Part an Important Role

প্রথম অধ্যায়

১.১ ভূমিকাঃ

 তিন দশক ধরে ধারাবাহিক ভাবে সরকার দারিদ্র বা ঝুকি বিমোচন কৌশল কর্মসূচি বাংলাদেশে চালূ আছে। দারিদ্রতার হার সত্তর দশকের চেয়ে ২০০০ সালে তুলনামূলক কম হার তার ১টি অবদান। সরকার দারিদ্রতার হার কমাতে উল্লেখযোগ্য বিমোচন করতে সাহায্য করেছেন, যাই হোক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাংলাদেশে দারিদ্র বিমোচন কৌশলের ১টি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা দারিদ্র হ্রাস, এর এক সামাজিক সুরক্ষা কৌশল সনাক্ত, বৃদ্ধি এবং দারিদ্র হ্রাস নিরবিচ্ছিন্ন করার জন্য উন্নত শাসন ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, মানব উন্নয়নে মানুষের বিনিয়োগ ক্ষমতা বাড়ানো, দুর্বলতা কমানো এবং আয় বৃদ্ধি করার সুযোগ নিশ্চিত করা জরুরী। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা একটি চ্যালেঞ্জ যা কর্মসূচি প্রণয়ন, খরচের সীমাবদ্ধতা, অন্যান্য বিনিয়োগের সুযোগ এবং আর্ন্তজাতিক অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য হয় এমন ভাবে পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে হয়।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি জনসংখ্যার দুর্বলের অংশ যেমন যার অবস্থান দ্বারা, লিষ্ট দ্বারা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে সংজ্ঞায়িত এবং ধর্ম দ্বারা সনাক্ত করা হয়েছে এবং যারা অর্থনৈতিক এবং প্রাকৃতিভাবে ঝুকির মধ্যে রয়েছে, যারা দীর্ঘকাল রোগ বা অপুষ্ঠিতে আক্রান্ত বা দারিদ্রতার মধ্যে পতিত হওয়ার ঝুঁকিতে চরমভাবে রয়েছে সেসব পরিবারের আয় ও ব্যয় মসৃনকরন করার উদ্দেশ্যে ও জীবন যাত্রার মান উন্নত করার উদ্দেশ্যে, অর্থনৈতিক ও প্রাকৃতির নেতিবাচক ক্ষতির প্রভাব সহ্য করার সক্ষমতা অর্জন করার উদ্দেশ্যে সহযোগিতা নিশ্চিত করার গুরুত্ব সরকার ও বিভিন্ন দাতা সংস্থা উপলব্ধি করতে পেরেছে। এই রচনায় বাংলাদেশে বর্তমানে বিদ্যামান সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বর্তমান অবস্থা এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সমালোচনামূলক মূল্যায়ন করা হয়েছে। বিদ্যমান সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির প্রধান কর্মসূচি এবং এর কার্যকারিতা প্রমান আলোচনা করা হয়েছে।

উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ দ্রুত প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। এক তার মানব উন্নয়নসূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশের এউচ বৃদ্ধির হার একটা সময়ের প্রায় অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের চেয়ে দ্রুততর যা বিগত দশক অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী অর্থনৈতিক পারফরম্যান্স করেছে। জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার দমনে এবং মাথাপিছু আয় রেড়েছে।বাংলাদেশের এই প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে তখন বিশ্বজুরে অর্থনৈতিক মন্দা, ঋণ সংকট, উচ্চ মুদ্রাস্থিতি হার, আঞ্চলিক ও বৈদেশিক অর্থনীতিতে মন্দা পরবর্তী পরিস্থিতিতে অর্জিত হয়েছে, আগামী দশকে সরকার দারিদ্র হ্রাস ও সামাজিক উন্নতির জন্য উচ্চভিলাসী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, জনগণের স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে ক্ষেত্রাবিশেষ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি পূর্নগঠন ও নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বাংলাদশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচক দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশ ভাল। বিশেষ করে শিশু মৃত্যুর হার, প্রমানকালীন মাতৃমৃত্যুর হার ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে ভাল। কিন্তু আয় বৈষম্য বিশেষত শহরাঞ্চলে মাথাপিছু আয় ও ব্যয়ের বৈষম্য রয়েছে। যার জন্য শহর ও গ্রাম নির্বিশেষে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সঠিকভাবে গ্রহণ করা প্রয়োজন। কেননা শহরাঞ্চলের বৈষম্য গ্রামীণ বৈষম্যের তুলনায় অনেক বেশি এবং তা ক্রমবর্ধমান। উন্নতি হলেও এখনোও অনেক মানুষ প্রায় একই রকম রয়ে গেছে। তাই চরম দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা জমিয়ে আনাই প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।

১.২ পটভূমিঃ

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ গুলোর মধ্যে অন্যতম দরিদ্র দেশ যেখানে অতি দরিদ্র জনগোষ্টিকে দরিদ্র জনগোষ্টিতে পরিনত করার জন্য কাজ করছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি অতি দরিদ্র জনগোষ্টিকে সহযোগিতা করার উদ্দেশে পরিকল্পনা করা হয়েছে । যুগ যুগ থেকে সঞ্চারিত দারিদ্রতা থেকে অতি দরিদ্র জনগোষ্টিকে মুক্ত করার স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তা  কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা  কর্মসূচির মাধ্যমে অতি দরিদ্র জনগোষ্টি যেন নিজেদের জীবন মান উন্নত করতে পারে,যেন তারা নিজেদের গড় আয় বৃদ্ধি করতে পারে , উৎপাদনশীল নুতন সম্পদ ক্রয় করতে পারে ,সে উদ্দেশে সরকার ও বিভিন্ন জাতীয়  ও আর্ন্তজাতিক সংস্থা অতি দরিদ্র জনগোষ্টির জীবন মান উন্নয়নে কাজ করছে ।
দারিদ্রসীমার নীচে যে সব মানুষ বাস করে তারা বিভিন্ন সমস্যার সম্মখীন হবে। ঐতিহ্যগতভাবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসরত মানুষের স্বল্পস্থায়ী সমস্যা বা বিপদ থেকে মুক্তির জন্য সহযোগিতা করার উদ্দেশ্য প্রণয়ন করা হয়ে থাকে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের উদ্দেশ্যেও কাজ করে। সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি কাজের বিনিময় খাদ্য, স্কুল ফিজিং, ক্ষুদ্রঋণ ব্রড জনবীমা কর্মর্সচি দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসরত জনগেষ্ঠিকে দীর্ঘস্থায়ী খাদ্য ও অর্থনৈতিক অনিরাপত্তা থেকে বাঁচতে সাহায্য করে। বাংলাদেশে রাষ্ট্রের জন্মের শুরু দারিদ্রতা দূরিকরণ করিয়ে আনা শুরু, বৈষম্য করিয়ে আনার উদ্দেশ্যে কাজ করেন। দারিদ্রতা দূরিকরণ সবসময়ই এদেশে একটি রাজনৈতিক আলোচ্য বিষয় ছিল। কিন্তু কিছু কিছু বির্তকও আছে যেমন দাতা সংস্থাগুলো অনেকসময় দরিদ্রসীমার নীচে বসাবসরত জনগোষ্ঠীকে কোন কাজ না করিয়ে অর্থ অথবা খাদ্যদ্রব্য সহযোগিতা করে থাকে। যদিও তাদের কিছূ ভাল যুক্তি আছে। বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি পরিচালন করে আসছে।                                                                                         

 ১.৩ সংজ্ঞাঃ

সামাজিক জীব হিসেবে মানুষের বিভিন্ন ধরণের অর্থনৈতিক, দৈহিক এবং মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এসব সমস্যার সধ্যে কতকগুলো স্বল্পমেয়াদি আবার অনেকগুলো দীর্ঘমেয়াদি ধরণের হয়। যেমন অসুস্থতা, মহিলা শ্রমিকদের প্রসবকালীন সময়, সাময়িক বেকারত্ব, মৃত্যু ্শংকা, দীর্ঘদিনের রোগ ভোগ, চাকরি হতে অবসর নেয়া ইত্যাদি সমস্যার আওতায় পড়ে। এসব সমস্যার ও অসুবিধার জন্য যে পুরিমাণ সম্ভাব্য আয় ক্ষতি হতে পারে তা পূরণের উদ্দেশ্যে যে আর্থিকত ও প্রকৃত সাহায্য প্রদানের পরিকল্পনা য়ো হয। এটাকে সহজ অর্থে সামাজিক নিরাপত্তা বলা হয়। এক একথায় বলা যায়, মানুষের বিশেষত শ্রমজীবী মানুষের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বিধিানের লক্ষে গৃহীত যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয় তাকে সামাজিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা বলা যায়।

এন. এম বুকানন এর মতে, “ নিশ্চিত কর্ম- সম্পাদনের নিমিত্তে পরিবেশ,স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার জন্য গৃহীত পদক্ষেপই হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা।”

চৎড়ভ. ইবহযধস বলেন, “ সামাজিক নিরাপত্তা হচ্ছে নূন্যতম আর্খিক নিরাপত্তাার ব্রাপারে গৃহতি একটি সামাজিক কর্মসূচি।”

সুতরাং বলা যায়, রাষ্ট্রতর নাগরিকদের বিভিন্ন দৈহিক, অর্থনৈতিক এবং মানসিক ঝুঁকির হাত হতে রক্ষার জন্য যে নিরাপত্তা জনিত সেবা প্রবর্তন করে তাকে সাপমাজিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা বলা যায়।

১.৪ সামাজিক নিরাপত্তার প্রকৃত ও গুরুত্বঃ 

 বর্তমান সমাজজবিন নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। শিল্পোন্নয়নের সাথে সাথে এ সমস্যাগুলো অত্যন্ত প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশেও এ জাতীয় সমস্যার অন্ত নেই। বাংলাদেশ বর্তমানে নানাবিধ সামাজিক ও অর্থনেতিক সমস্যার জর্জরিত্ জনগণের মৌলিক অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা জকরার জন্য সরকার শাসনতান্ত্রিকবাবে ওয়াদাবদ্ধ্ বাংলাদেশ সরকার জনগণের কল্যাণের জন্য কিছু কিছ’ পদক্ষেপগুলো প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্ত স্বল্প হলেও এতে সমাজিক কল্যাণে সরকারের আগ্রহের নিশ্চয়তা বিধান করে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে সরকারের পক্ষে সুষ্ঠু ও সঠিকভাবে সামাজিক কল্যাণ সাধন করা সুকঠিন্ সরকারের পক্ষে বিপুল পরিমাণ অর্থ সঙগ্রহ কেের ধীরে ধীরে সুষ্ঠু ও সঠিক কর্মপন্থার মাধ্যমে সামাজিক কল্যাণে প্রতি অগ্রসর হতে হবে। প্রথক শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেও সরকার বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা উপযুক্ত প্রশিক্ষণম বিনামূল্যে চিকিৎসা, শ্রমিকদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য স্কুল স্থাপন বস্তির পরিবেশ, হতে শ্রমিকদের রক্ষা করার জন্য বাসগৃহ নির্মাণম ন্যায্যমূল্যে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, অসুস্থ অবস্থায় ভাতা প্রাদন, নিরাত্তা নিশ্চয়তা বিধান ইত্যাদি রয়েছে।

সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সেরাকর্ম সংগঠন সামাজিক নিরাপত্তা বিধিানে এগিয়ে এসেছে। অসহায় ও অবহেলিত মানুষের কল্যাণে স্বেচ্ছাসেবক প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ নিজ ক্ষমতা অনুসারে সামাজিক কল্যাণ ও মঙ্গল সাধনে নিজেদেরকে নিয়োজিত রেখেঠি। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ রেডক্রস, লায়ন্স ক্লাব, রোটারি ক্লাব, বাংলাদেশ অন্ধ কল্যাণ সমিতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠানে উৎপাদনে উৎপাদন ক্ষেত্রে যন্ত্রের প্রয়োগ হওয়ায় পেশাগত দূর্ঘটনা ও নানা রকমের রোগ শোক কর্মরত শ্রমিকগণের দৈনন্দিন বিষয় হয়ে পড়ায় বিশেষভাবে বেড়ে যায় সামাজিক নিরাপত্তার আবশ্যকত্ াবহু সময় পেশাগত দূর্ঘটনার কবলে পতিত হয়ে এবঙ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বহু লোককে প্রাণে বেঁচে থাকলে ও সমাজে অকেজো হয়ে পড়ে থাকতে হয়।

অকেজো শ্রমিকের খেয়ে পরে বেঁচে থাকার প্রয়োজন এবং তার পরিবারের নির্ভরশীল সদস্যদের ভরনপোষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনে সমাজ কর্তৃক তার নিরাপত্তার দায়িত্ব বহন করা বাঞ্ছনীয়। আধুনি ক জীবনের অসুস্থতা, বেকারত্ব। বার্ধক্যজণিত নির্ভরশীলতা, শিল্প দূর্ঘটনা, পঙ্গুত্ব ইত্যাদি এমন সকল বিপর্যয় মোকাবিলায় সামাজিক প্রতিরক্ষামূলক কর্মসূচি, সেসব থেকে কোন ব্যক্তি স্বীয় সামথ্য ও দূরদৃষ্টির সাহায্য নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে রক্ষা করার আশা করতে পারে তাকে সামাজিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা বলা যায়। সুতরাং বলা যায় রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মপ্রচেষ্টা হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা।

দ্বিতীয় অধ্যায়

২.১ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিঃ

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সরকারি অর্থায়নে অলাভজনক প্রোগ্রাম যা ঝুঁকিপূর্ণ অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠিকে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহযোগিতা করে থাকে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সকল সুবিধাসমূহ যেন সকল জনসাধারনের মধ্যে সমানভাবে পৌঁছে তা সামাজিক নিরাপত্তার লক্ষ্য। উন্নতদেশে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি খুবই নিয়মিত একটি কাজ। বর্তমান উন্নয়নশীল দেশও এটি একটি নিয়মিত কর্মসূচি যা অতিদরিদ্র, দরিদ্র ও দূরিকরণ কর্মসূচি।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি অর্থাৎ জাতীয় বা স্থানীয় সরকার কর্তৃক পরিচালিত বা বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক দাতা গোষ্ঠী কর্তৃক পরিচালিত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সুবিধা ও অসুবিধা।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি নিঃসন্দেহে দারিদ্রসীমা নীচে বসবাসরত জনগোষ্ঠীকে সহযোগিতা করার একটি ভাল উপায় কিন্তু সেখানেও কিছূ বির্তক আছে। তবুও এসব কর্মসূচির অভাবে মানুষকে বিভন্নভাবে সহযোগিতা করে।

সুবিধা :

* অপরাধসমূহ ঃ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি মানুষের চুরি ও অন্যান্য অপরাধ করাতে সাহায্য করে। কেননা তারা তাদের জীবন বাচানোর জন্যই অধিকাংশ সময় চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত হয়।

* স্থিতিশীলতা ঃ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সামাজিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

* অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঃ সামাজিক নিরাপত্তা অর্থের পুনঃচক্র/হাতবদল ঘটায় যার কারনে অর্থনৈতিক উন্নযন ঘটে।

* সামাজিক ন্যায় বিচার ঃ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ব্যবহৃত অর্থ সাধারণত ধনীদের কাজ থেকে সংগ্রহ করা হয় যা অতিদরিদ্রদের হস্তান্তর করা হয়। যা ধনী দরিদ্রদের মধ্যে ব্যবধান কমাতে সাহায্য করে এটাই সামাজিক ন্যায় বিচার।

২.২ সামাজিক নিরাপত্তা প্রবর্তনের কারনঃ

যে সমস্ত কারণে সামাজিক নিরাপত্তা প্রবর্তনের পয়োজন হয়েছে সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলোঃ

১.       শিল্প ক্ষেত্রে দগূঘৃটনা ঃ শিল্প ক্ষেত্রে শ্রমিকগণ সনবসময়ই দূর্ঘটনার আতঙ্কে থাকে। কর্মরত াবস্থায় শ্রমিক দূর্ঘটনার কবলে পতিত হয়ে হাত বা পা হারিয়ে পঙ্গু হয়ে যেতে পারে। আবার ভারি যন্ত্রপাতির ব্যবহারে মৃত্্যু ঘটতে পারে। কর্মরত শ্রমিকদের এ দরনের দূর্ঘটনায় পতিত হরার পর তারপর এবং তার পরিবারবর্গের আর্থিক সাহয্যের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রবর্তন করা হয়।

২.      অকালবার্ধ্যক্যঃ শিল্প শ্রমিকের শ্রম শক্তি দ্রুত নিঃশেষ হয়ে পড়ে যন্ত্রচালিত শিল্প প্রতিষ্ঠানে কাজ করার ফল্ েদিনের পরদিন একঘেয়েমি কাজ করার দরুন শ্রমিক তার জীবনীশক্তি হারিয়ে ফেলে। এরুপ অবস্থায় শ্রমিক যখন প্রয়োজন অনুযায়ী তার শ্রম বিনিয়োগ করতে পারে না তখন তাকে স্বাভাবিকভাবে কর্মক্ষেত্র থেকে ছাঁটাই করা হয়। কারণ মালিক তার উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য অধিক কর্মক্ষমতা ব্যক্তিকে নিয়োগ করে। ছাঁটাইকৃত শিল্প শ্রমিককে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা প্রদানের জন্য মালিক এককালিন আর্থিক সাহায্য দিয়ে থাকে।

৩.      পরিবেশ বিপর্যয়ঃ বাংলাদেশের পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও আবহাওয়া দূষণের কারনে এ দেশ বিনিষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া অধিক জনসংখ্যার চাপে প্রাকৃতিক পরিবেশ আজ বিপর্যস্ত। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার অভাব মেটাতে গাছ কেটে সেখানে কলকারখানা স্থাপন করা হচ্ছে । এ অবস্থায় সামাজিক নিরাপত্তার মাধ্যমে পরিবেশ বিপর্যয় রোধ করা যেতে পারে।

৪.      পেশাগত ব্যাধিঃ আমাদের মতে দরিদ্র রাষ্ট্রের শ্রমিকদের অধিকাংশ সময়ই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে হয়। পর্যাপ্ত আলোবাতাসের অভাবে অধিকাংশ শ্রমিক দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। এ অবস্থাতে শ্রমিকদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা প্রয়োজন হয়।

৫.      প্রাকৃতিক দূর্যোগঃ প্রাকৃতিক দূর্যোগের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা অপরিহার্য । প্রাতৃতিক দূর্যোগের কারনে সামাজিক জীবনে নিরাপত্তাহীনতা বিরাজমান পড়ছে। এ দেশে প্রতি বছর খরা, ঘুর্ণিঝড় ও  জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়ে। প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে সম্পদ ও উৎপাদনের ক্ষতি হয়। ফলে জনগণ অনাহারে ও অর্ধাহারে জীবন যাপন করে। সামাজিক নিরাপত্তার মাধ্যমে প্রাকৃতিক দূর্যোগ অতিক্রম করা সম্ভবপর হয়।

৬.      কারিগরি মানের পরিবর্তনরঃ আধুনিক যুগের বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা সাথে সাথে কারিগরি ক্ষেত্রে যে দ্রুত পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে তার প্রভাব আমাদের যোগাযোগ বা পরিবহন ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও প্রভাবিত করে। যেমন- ঘোড়ার গাড়ীর পরিবর্তে মোটর গাড়ীর পরিবর্তন।

৭.      অনুন্নত জীবনব্যবস্থাঃ অনুন্নত জীবনব্যবস্থা সামাজিক নিরাপত্তার একটি কারণ। বাংলাদেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান অত্যন্ত নি¤œ । নি¤œমানের জীবনযাত্রার কারনে তারা সামাজিক নিরাপত্তায় ভুগছে। অনুন্নত জীবনযাত্রার কারনে তাদের মাথাপিছু আয়ও অত্যন্ত কম। সুতরাং জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা দরকার।

৮.      সরকারি সাহায্যঃ সরকার তার কর্মচারীদের নিরাপত্তা এবং আর্থিক সাহায্যের জন্য বিভিন্ন ভাবে নিরাপত্তামূলক কর্মসূচী প্রদান করে থাকে। সরকারি কর্মচারী একটি নির্দিষ্ট  সময় পর্যন্ত চাকুরীর পর অবসর গ্রহন করে থাকে। তখন এ কর্মচারীকে সরকার আর্থিক সাহায্যের জন্য ভাতা প্রদান করেন। তাছাড়া কর্ম ব্যয়রত কোন সরকারি কর্মচারী মারা গেলে তার পরিবারকে এককালিন অধিক সাহায্য দেওয়া হয়। এ ধরণের পদ্ধতিও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর অন্তর্ভূক্ত।


২.৩ সামাজিক নিরাপত্তার প্রকারভেদঃ

প্রধানত তিনভাবে নিরাপত্তার বিধান সম্ভব।



  

    সামাজিক বীমাঃ সামজিক বীমা শ্রমিক এ কর্মচারীদের জন্য বাধ্যতা মূলক নিরাপত্তা কর্মসূচী বীমায় তহবিল গঠিত হয় শ্রমিকের বেতনের দেয়া নির্ধারিত শতাংশ, মালিক কর্তৃক প্রদত্ত সমপরিমাণ অংশ ও কোন কোন ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অংশ নিয়ে। সামাজিক বীমা সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত প্রতিষ্ঠানের শ্রমিককে কর্মসূচীর আওতাধীনে আনা হবে। বীমার কিস্তির টাকার পরিমাণ কত হব্ েএ

তহবিল কিভাবে পরিচালিত হবে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট খুটিনাটি সবকিছু সরকার কর্তৃক আইন পাস করে ঠিক করা হয়। সরকারী উদ্দ্যোগে গৃতীত কিছু পদক্ষেপ যেমনঃ

ক) ক্ষতিপূরণ আইন

খ) মাতৃকল্যান আইন

গ) কল্যান তহবিল এ যৌথ বীমা

ঘ) সামাজিক কল্যান তহবিল

ঙ) পেনশন ও প্রভিভেডন্ড ফান্ড।

    সামাজিক সাহায্যঃ যে সব ব্যক্তি সামাজিক বীমার আওতাবুক্ত নয় বা যারা সামাজিক বীমার সুযোগ- সুবিধার মেয়াদে পৌছায়নি বা পেয়ে এ অভাব অনটন মেটেনি সেব ব্যক্তিদের সাহায্যের জন্য যে ব্যবস্থা করা হয়। তাই সামজিক সাহায্যে।

যেমন-

ক. বৃদ্ধদের জন্য চিকিৎসা ভাতা

খ. পারিবারিক ভাতা

গ. শিশু ভাতা

ঘ. পঙ্গু এ বিকলাঙ্গদের জন্য সাহায্য।

ঙ. টেস্ট রিলিফ কর্মসূচী

চ. প্রাকৃতিক দূর্যোগ ক্ষতিগ্রস্থ লোকদের সাহায্যে।

    সমাজ কল্যাণ: সমাজ জনগণের কল্যানে যেসব কর্মসূচী হাতে নেয়া হয় তাই সমাজসেবা। তবে সমাজ সেবা সরকারী ও বেসরকারী উদ্দেগে প্রবর্তিত হতে পারে।

ক. শহর সমাজ উন্নয়ন পরিকল্পনা

খ. শিশু কল্যান মাতৃকল্যান ও পরিবার পরিকল্পনা

গ. যুব কল্যান।                                                                                             

ঘ. চিকিৎসা সমাজকর্ম

ঙ. শ্রম কল্যান ।

 তৃতীয় অধ্যায়
৩.১ গৃহিত পদক্ষেপ ঃ

কৃষি, খাদ্য ও সামাজিক নিরাপত্তায় অর্জিত সাফল্য, এই বিষয়ে আলোচনার গুরুতেই বলে নিতে হয় যে, সাফল্য বিষয়টা তুলনামূলক। দ্বিতীয়ত, সাফল্য সব সময়েই হয় দৃশ্যমান।

কথার ওপরে সাফল্য নির্ভর করে না, কথা দিয়ে সাফল্যকে প্রতিষ্ঠা করা যায় না। তথ্য ও প্রমান সাফল্য বিচারের হাতিয়ার। তৃতীয়ত, সাফল্যকে বিবেচনায় নিতে হয় চলমান বাস্তবতা দিয়ে। সাফল্যের ধারাবাহিকতা কিংবা পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে সাফল্য সহজেই হাতের মুঠোয় চলে আসে। আর পর্বত প্রমাণ সমস্যা-সংকট নিয়ে শুরু করলে কিংবা পরিস্থিতি প্রতিকূল হলে সাফল্যের ধারা নিয়ে আসা এবং একে ধারাবাহিকভাবে অগ্রসর করতে হয় কঠিন প্রচেষ্টার মধ্যদিয়ে। চতুর্থত, কোনো এক ক্ষেত্র সাফল্য আরও ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে। তাই সাফল্যকে সব সময়েই উচ্চ মুল্যায়ন করতে হয়। এই চারটি দিককে বিবেচনার মধ্যে রেখে বিগত তিন বছরে উল্লেখিত তিন ক্ষেত্রের অর্জিত সাফল্য নিয়ে আলোচনায় যেতেহবে।

দারিদ্র বিমোচনের প্রধান কৌশল হিসেবে ‘কৃষি ও পল্লী জীবনে গতিশীলতা আনয়ন’ এবং ‘হত দরিদ্রের জন্য সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী বিস্তৃত’ করাকে এই সরকার লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারন করেছে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্যই সরকার বিগত তিন বছর কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণতা অর্জন, খাদ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ঐক্যান্তিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সাফল্য ও অর্জিত হচ্ছে। রূপকল্প ২০১১ বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হলে সরকারের বাকী দুই বছর এই সাফল্যের ধারাকে আরও সুপরিকল্পিত, সমন্বিত ও বেগবান করা ভিন্ন বিকল্প নাই।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী স্বাধীনতার পর থেকে ২৫ বছরে দানাদার খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পায় ১ কোটি ১০ লক্ষ টন থেকে ১ কোটি ৯০ লাখ টনে। বোড়ে ৮০ লাখ টন। আর ৯৮-২০০১ সালে বুদ্ধি পায় ৭৯ লাখ টন। (খ) মজুত বৃদ্ধি করে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত হয়। ওই সময়ে প্রলয়ঙ্কারী বন্যার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা সম্ভব হয়। বন্যায় সময়ে বিবিসিতে প্রচার করা হয়, কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ অনাহারে মারা যাবে। কিন্তু ওই ভবিষ্যৎ বাণী সরকার ভূল প্রমাণ করে।

(গ) দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্য ১৯৯৬-২০০১ আমলেই বাংলাদেশ সর্বপ্রথম হতদরিদ্র মানুষের বেঁচে থাকার জন্য কল্যাণমূলক সৃজনশীল নানা কর্মসূচী যেমন- দুঃস্থ ভাতা, বিধবা ভাতা , মুক্তিযোদ্ধা ভাতা প্রভৃতি চালু করে। ফলে দরিদ্র হ্রাসের বার্ষিক গড় হার ০.৫০ শতাংশ থেকে ১.৫০ শতাংশ উন্নীত হয়। মানব দারিদ্র সূচক ৪১.৬ থেকে ৩২ শাতাংশ নেমে আসে। জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন ৩৩ পয়েন্টের বিপরীতে ৫৬ পয়েন্ট অর্জন ছিল তারই ফলশ্রুতি। উল্লেখিত সব অনন্য সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ তখন প্রধানমন্ত্রীকে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য ‘সেরেস’ পদকে ভূষিত করে।

পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে বিশ্বব্যাপী দেখা দেয় খাদ্য সংকট। চাল ও গমের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে। ভারতসহ খাদ্য উৎপাদনকারী দেশগুলো খাদ্য রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। খাদ্যশস্য আমদানি করা কঠিন হয়ে পড়ে। এতে খাদ্য ঘাটতি বেড়ে যেতে থাকে এবং খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আরও জটিল ও ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়।                                                                            ৬

কৃষি মন্ত্রণালয়ের নিম্নলিখিত কাজগুলো বিবেচনায় নিলেই অনুধাবন করা সম্ভব হবে, কিভাবে কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের ধারায় দেশকে আবারও ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে।

ক) সারের মূল্য কৃষকদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য নন-ইউরিয়া সারের দাম তিন বারে প্রায় তিন চতুর্থাংশ হ্রাস করা হয়। ১৪ লক্ষ কৃষককে বিনামূল্যে সার প্রদান করা হয়। ১৯৯৬-০১ অমলের অভিজ্ঞতা সামনে রেখে সরকার সার কৃষকদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাকে সহজ ও দুর্নীতিমুক্ত করে। এখন সার প্রাপ্তিতে কৃষকরা এখর আর অনিশ্চয়তা ও অশান্তির মধ্যে থাকে না। প্রসঙ্গত, গুটি ইউরিয়া সার ব্যবহারের ফলে এক তৃতীয়াংশ ইউরিয়া সার সাশ্রয় করা যায়। ১৯৯৬-০১ কৃষি মন্ত্রণালয় যান্ত্রিক পদ্ধতিতে গুটি ইউরিয়া সার প্রয়োগ কার্যক্রম গ্রহণ করে। বর্তমানে কৃষি মন্ত্রণালয় ইউনিয়া সার সাশ্রয়ের লক্ষ্যে দেশে সর্বমোট ৩১০টি উপজেলায় গুটি ইউরিয়া সারে কর্মসূটি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

খ) বর্তমানে রাসায়নিক সার, বিদ্যুৎ, ডিজেল ও আখচাষিদের সহায়তা বাবদ ভর্তুকি প্রদান কর্মসূচি বিস্তৃত করে চলেছে। ক্ষমতা গ্রহণের আগে ২০০৭-০৮ অর্থ বছরে ভর্তুতি ছিল ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। বর্তমান অর্থ বছরে প্রথম ছয় মাসে ভর্তুকি খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তিন বছরে সার, বিদ্যুৎ ও ডিজেল ১৬ হাজার ৩৭৭ কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া হয়েছে।

গ) সেচ কাজে ভূ-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহারের লক্ষ্যে বিএডিসির মাধ্যমে দেশের জলাবদ্ধ এলাকা হাওর ও দক্ষিণাঞ্চল এলাকায় ৩৬টি ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ফলে ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৩০ টন অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। বরেন্দ্র অঞ্চল তথা রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে গভীর নলকূপ স্থাপন ও সচলকরণ করে ২০০৯-১০ অর্থ বছরে বোরো মৌসুমে ১২ হাজার ৪৫৩টি গভীর নলকূপ ব্যবহারের মাধ্যমে ১৪.১৫ লাখ টন ধান উৎপাদিত হয়েছে। সেচনালা নির্মাণ, পুকুর খনন, খাল ও খাড়ি পুনঃখনন ও ক্রস ড্যাম নির্মানের ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে ফসল উৎপাদন বেড়েছে।

ঘ) কৃষির বহুমুখীকরনে সরকারি উদ্যোগ সাফল্যের বার্তা বয়ে আনছে। চরাঞ্চল ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় অঞ্চলে ভূট্টা চাষ উৎসাহিত করার জন্য ৫০ হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে পরিবার প্রতি সর্বোচ্চ এক বিঘা জমিতে প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার বিনামূল্যে প্রদান করা হয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় এবং বিভিন্ন ফল বাগানে সাথি-ফসল হিসেবে আদা ও হলুদ চাষে স্বল্প ঋণ কর্মসূচি গ্রহণ করায় উৎপাদন বেড়েছে। সরকার ডাল, তেল, মসলা ও ভুট্টা ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য চাষিদের ৪ শতাংশ হারে ঋণ দিচ্ছে। শাক-সবজি, ফল, মসলা ও চীনাবাদাম চাষকেও উৎসাহিত করা হচ্ছে। ১২ হাজার হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হচ্ছে।

ঙ) খামার যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে ২৫ শতাংশ কম মূল্যে বিভিন্ন কুষি যন্ত্রপাতি, যেমন- পাওয়ারটিলার, ট্রাক্টর, পাওয়ারথ্রেসার, মেইজ সেলার, স্পেয়ার, উইডার ইত্যাদি কৃষকদের মধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে। উপকূলীয় বরিশাল ও খুলনা জেলার লবনাক্ত জমি ও বৃহত্তর সিলেট জেলার পতিত জমিকে ক্রমে চাষের আওতায় আনা হচ্ছে।

ছ) কৃষি/পল্লী ঋণ নীতিমালা সময়োপযোগী করে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। কৃষিঋণ বৃদ্ধি করে এ বছর ১৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। নতুন নতুন এলাকায় নতুন ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষিঋণ বিতরণে সরকার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও উৎসাহ প্রদান করছে।

জ) সোনালী আঁশ পাটকে পুনরুজ্জীবনের ধারায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাটের জীবন রহস্য উম্মোচনের মাধ্যমে কৃষি গবেষণায় যুগান্তরকারী সাফল্য অর্জন করেছে। ফসলের জীবন রহস্য উম্মোচনে এই অর্জন স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে প্রথম এবং সারা বিশ্বে ১৭ তম। এই আবিস্কারের ফলে ভবিষ্যতে পাট উৎপাদনে বিভিন্ন প্রতিকূলতা রোধ ও উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

ঝ) প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ কৃষককে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদান এবং ১০ টাকায় ৯৬ লাখ ২৫ হাজার ৫৫৩ জন কৃষককে ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুযোগ দান সরকারের এব যুগান্তকারী কর্মকান্ড। কর্ড প্রদর্শন করে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে ডিজেল ক্রয়ে আর্থিক সহায়তা কৃষকের হাতে সরাসরি পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কৃষক সমাজকে ব্যাংকের আওতায় আনার ঘটনা কেবল কৃষক সমাজের মর্যাদা ও ক্ষমতায়নেরই সহায়ক নয়, দেশের অথনীতিতেও এর প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী।

উপরোল্লেখিত ব্যবস্থাসমূহ গ্রহণের ফলে ২০০৫-০৬ চালের উৎপাদন ছিল ২৬৬ লাখ টন, সেখানে বর্তমানে ২০১০-১১ অর্থ বছরে তা হয়েছে ৩৩৫.৪১ লাখ টন। একইভাবে গমের উৎপাদন যেখানে ছিল ৭.৪ লাখ টন সেখানে হয়েছে ৯.৫৮ টন। ভুট্টা, পেঁয়াজ, আলু, সবজি উৎপাদন ও একইভাবে রেড়ে গেছে। খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে চলতি ২০১১-১২ অর্থ বছরের প্রথমার্ধে দেশে খাদ্যশস্য আমদানি উল্লেখ্যযোগ্য হারে কমেছে। এই সময়ে দেশে খাদ্যশস্য আমদানি বাবদ ব্যয় করতে হয়েছে ৫২ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। আর গত অর্থ বছরের এই সময়ে এই ব্যয়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ৭৬ কোটি ডলার। সরকার ইতোমধ্যে বর্তমান অর্থ বছরে চাল আমদানি ৪৩ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। গত অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসে যেখানে বিভিন্ন ধরনের ডাল আমদানি বাবদ ১৬ কোটি ৫৭ লাখ ডলার ব্যয় হয়েছিল, সেখানে চলতি অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসে ১২ কোটি ৬১ লাখ ডলার ব্যয় হয়েছে। ফলে আমদানি জনিত ব্যয় কমেছে প্রায় ২৪ শতাংশ। এতে কেবল বৈদেশিক মুদ্রারই সাশ্রয় হয় নাই, আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যের প্রভাবও রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। কৃষি ক্ষেত্রে তিন বছরের কর্মকান্ডে আমদানি ব্যয় কমানো সরকারের বড় সাফল্য।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. বিনায়ক সেন বলেছেন, সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল শুধু গ্রামের দারিদ্রকে গুরুত্ব দিলে হবে না। এ ক্ষেত্রে শহরের দরিদ্র মানুষদের জন্যও কৌশল থাকতে হবে। তাছাড়া সামাজিক বীমা কিংবা মাইক্রো হেলথ ইন্সুরেন্সের মতো কর্মসূচি না থাকলে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি কোন কাজে আসবে না।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, সামাজিক নিরপত্তা কর্মসূচিকে আরও উৎপাদনমুখী ও মানব সম্পদ উন্নয়নমূলক করতে হবে। এ ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে গরিব মানুষদের উন্নয়ন কাজে লাগানো যেতে পারে। তবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অন্তর্ভূক্ত করা যেতে পারে। মানুষের দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে হলে কর্মসূচিতে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে।

সম্প্রতি রাজধানীর সবচেয়ে বড় বস্তি কড়াইল বস্তিতে গিয়ে দেখা গেছে, এ বস্তিতে বাস করছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার ভাগ্যবিরন্বিত মানুষ। সেখানে প্রতিবন্ধী ভাতা দেখা হচ্ছে ১০ জনকে। এর আওতায় রাখা। সরকার প্রতি কেজি চালের মূল্য ২৪ টাকা এবং আটার মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করে খোলা বাজারে বিক্রি কার্যক্রম সাফল্যের সাথে অব্যহত রেখেছে।

কারো হাতে আলাদীনের এমন চেরাগ নেই যাতে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি কিংবা অভ্যন্তরীন বাজারে সরবরাহ ও চাহিদার ফারাক কিংবা প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে বাজারে মূল বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা রোধ করা সম্ভব। মার্কেটিং অপারেশন, খাদ্য আমদানিতে বিভন্ন সুবিধা প্রদানসহ কতক ব্যবস্থা সরকার সাফল্যের সাথে অব্যাহত রাখছে। প্রসঙ্গত, পত্র পত্রিকায় সার্ক দেশগুলোর মূল্য তালিকার তুলনামূলক চিত্র হরহামেশা প্রকাশিত হচ্ছে। পাকিস্তানে মুদ্রাষ্ফীতি ১৫ শতাংশ, শ্রীলংকা ও মালদ্বীপে এর কাছাকাছ্ িভারতে দুই অঙ্কের ঘরে, উঠতি-পড়তির মধ্যে আছে। আমাদের মুদ্রাষ্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে থাকলেও গত বছরের শেষ দিক থেকে তা কমার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জিত না হলে চাপ নিঃসন্দেহে আরও বাড়তো।

কৃষি ক্ষেত্রে উল্লিখিত সাফল্য অর্জন খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ক্রমেই জোরদার ও টেকসই করে তুলছে। বিগত তিন বছরে সেখান থেকে সরকারি খাদ্য গুদামে বর্তমানে সাম্প্রতিক কালের রেকর্ড পরিমাণ ১৪ লাখ ৭৭ হাজার টন খাদ্যশস্য মজুত করা সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে চালের পরিমাণ ১১ লাখ ৫১ হাজার টন এবং গমের পরিমাণ ৩ লাখ ২৬ হাজার টন। এই নব্য সারা দেশে মোট ১ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার নতুন গুদাম নির্মান করা হয়েছে। এখন সরকারের টার্গেট হচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২০ লাখ টন খাদ্যশস্যের মজুত গড়ে তোলা। এই লক্ষ্য অর্জনে যে সরকার সফল হবে, তা ধারাবাহিক সাফল্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়।

খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ও নিরাপদ খাদ্য মজুত গড়ে তোলার লক্ষ্য বাস্তবায়নের সাথে সাথে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও বর্তমান সরকারের সাফল্য লক্ষণীয়। সমাজের অসহায় অতিদরিদ্র জনগণকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওয়তায় আনতে ভিজিএফ কার্ড সংখ্যা ৭০ লাখ ৬৭ হাজার থেকে বৃদ্ধি করে ১ কোটি ৭৬ হাজার ৩০০ টিতে উন্নীত করা হয়েছে। অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা ভাতাভোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ থেকে দেড় লক্ষে, মাতৃকালীন ভাতাভোগীর সংখ্যা ৬০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ১২০০ জনে, বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা সাড়ে ২২ লক্ষ থেকে ২৩ লক্ষ ৭৫ হাজারে উন্নীত করা হয়েছে। ভিজিডি কর্মসূচির আওতায় সাড়ে সাত লক্ষ নারীকে মাসিক ৩০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। দারিদ্র বিমোচনে সরকারের একটি উল্লে­খযোগ্য সফল উদ্যোগ হচ্ছে ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’। প্রকল্পটি ৪৮২ টি উপজেলার ৯,৬৪০ টি গ্রামে বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং ১০ লক্ষ ৪৩ হাজার পরিবার সরাসরি সুফলভোগী হয়েছে। ছিন্নমূল মানুষের পূনর্বাসনের লক্ষে গৃহীত ‘ঘরে ফেরা’ কর্মসূচি বিএনপি-জামাত জোট সরকার বন্ধ করে দিয়েছিল। আবারো এই কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। ‘আশ্রয়ন প্রকল্প’ এর মাধ্যমে দুই দফায় মোট ১ লক্ষ ৯ হাজার পরিবার পুনর্বাসিত হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলে গৃহহীন মানুষের জন্য পাকা ঘর নির্মান করে প্রায় ৯ হাজার পরিবারকে পুনর্বান করা হয়েছে।

অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্য সামান্য হলেও কমেছে। এই সব দিক লক্ষ্য করেই নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেন বলেছেন, মানব উন্নয়নের সূচকে বাংলাদেশ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় এগিয়ে আছ্ েপ্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গের জনপদে বছরের পর বছর ধরে মঙ্গা ছিল এক বিভীষিকাময় শব্দ। বস্তুতপক্ষে, কৃষি উন্নয়ন, খাদ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের সহযোগিতা পেলে বাংলাদেশের কৃষক মাথার ঘাম পায়ে পেলে সৃজনশীলতা দিয়ে অসাধ্য সাধনে সক্ষম। বাস্তবে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, খাদ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অরাজকতা দূর করা বাংলাদেশের জনগণের জন্য আকাশ কুসুম  কোনো কল্পনা নয়। অর্জিত এই সাফল্য ‘আমারাও পারি’ আমারাও পারবো’ বলে জাতীয় মনোবল জাগ্রত করে এবং আরও উদ্যোগী, তৎপর ও ঐক্যবদ্ধ হতে অনুপ্রেরণা যোগায়। গ্রামগঞ্জে একটা বহুল প্রচলিত কথা রয়েছে যে, ঘরে ধান থাকলে অনেক কিছুই সহজ হয়ে দেশবাসী সর্বান্তকরণে এই প্রত্যাশা করে সরকার যেন সাফল্যের ধারাকে ধরে রেখে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, খাদ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে অন্যান্য সকল কর্মকান্ডকে সহজ করে দেয়।                                                       

কোল্ডাস্টোরেজগুলো বন্ধ বা রুগ্ন হচ্ছে, ব্যাংক ঋণের অর্থ যোগান দিতে সমস্যা করছে। এই ধরনের দ্বিমুখী সমস্যা সমাধানের কী নীতি ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়, তা এখন বিবেচনায় নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। ইতোমধ্যে সরকার বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে অধিক আলু রপ্তানিতে নগদ সহায়তা অর্থাৎ ইনসেনটিভ প্রদান ১০ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত করেছে। ২০০৬-৭ অর্থবছরে শাক-সবজি ও ফল রপ্তানি হয়েছিল ১৯ হাজার ৮০৫ মেট্রিক টন, যার মূল্য ৪ কোটি ৫ লক্ষ ৩০ হাজার ডলার, বর্তমানে ২০১০-১১ সালে তা হয়েছে দ্বিগুণেরও অনেক বেশি ৪৮ হাজার ৪২৮ মেট্রিক টন ও মূল্য ১০ কোটি ৯৪ লক্ষ ১০ হাজার ডলার। খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প প্রসারেও সরকার ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের এসএমই ঋণ প্রদানে ব্যাংকগুলোকে উৎসাহিত করছে। বর্তমানে ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি ও বড় মিলিয়ে মোট ৬০০০টি কারখানা চালু রয়েছে। এই ধরনের কারখানা ভারতে ৭.৮ ও চীনে ৯.৪ শতাংশ বাড়ার তুলনায় আমাদের দেশে ৮ শতাংশ করে বাড়ছে। ৭০টি পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।

কৃষকদের স্বার্থে উল্লিখিত সব উদ্যোগের পাশাপাশি উক্তোদের স্বার্থের বিভিন্ন ধরনের নীতি ও পদক্ষেপ বাস্তবায়নের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, পণ্যেও বাজার মূল্য নির্ভর করে সরবরাহ ও চাহিদার ওপর। বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় তা কেবল অভ্যন্তরীন বাজারের ওপর নির্ভর করে না, আন্তর্জাতিক বাজারে ওপরও নির্ভরশীল। প্রসঙ্গত, এটাই বাস্তব যে, যদি কোনো নির্দিষ্ট একটি পণ্যের মূল্য বাজারে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়, তবে অন্যান্য পণ্যের মূল্যও বাড়াতে বাধ্য। এছাড়া মৌসুমের সময় কৃষি পণ্যের দাম কমে, অন্য সময় বাড়তির মধ্যে থাকে। মজুতদারি-মুনাফাখোরি সিন্ডিকেট, রাস্তায় ও বাজারে চাঁদাবাজি মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারন। ৪৫ দিনের মধ্যে চাল কলগুলো মজুত মালামাল বিক্রি না করলে ব্যাংক ঋণ প্রদান বন্ধ এবং এই নিয়ম কার্যকর করতে মনিটরিং ব্যবস্থা বর্তমান সরকারের আমলে চালু হওয়ার ফলে কত পরিমাণে মজুতদারি রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য সৃষ্টির জন্য বাজার পর্যবেক্ষন, আমদানির সুবন্দোবস্ত করার ক্ষেত্রেও সরকারি প্রচেষ্টা নানা সীমাবদ্ধতা-দূর্বলতা সত্ত্বেও লক্ষ্য করার মতো। বর্তমান সরকারের বড় একটি সাফল্য হচ্ছে খাদ্যশস্যেও মূল্য বাজারে বাড়তে থাকলে যথাযথভাবে মার্কেটিং অপারেশন চালু বাইরে রয়েছে অনেক প্রতিবন্ধী মানুষ। সামান্য কছু মানুষ বয়স্ক ভাতা ও অন্যান্য ভাতা পাচ্ছেন। আরও অনেক প্রতিবন্ধী থাকলেও তারা ভাতার বাইরেই থাকছে। কড়াইল বস্তির মতো সারা দেশে বর্তমানে ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষ বসবাস করে। যার মধ্যে ৮২ লাখ লোক দরিদ্র এবং ৩০ লাখ লোক হতদরিদ্র। ইউএনডিপি’র তত্ত্বাবধানে ইউকেআইড-আর আর্থিক সহায়তায় এলজিইডি কর্তৃক বাস্তবায়িত নগর অংশীদারিত্বেও মাধ্যমে দারিদ্র হ্রাসকরণ প্রকল্পের উন্নয়ন নগরয়ণ ও বাংলাদেশ শীর্ষক একটি কেস স্টাডিতে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ খাতে বর্তমানে ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করা হচ্ছে, যা মোট দেশজ উৎপাদনের ২ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু এ খাতে এসব ক্ষেত্রে গভীর পর্যবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।


৩.৩ সরকারী বিভিন্ন পদক্ষেপ সমূহের সীমাবদ্ধতাঃ

সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী খাতে বরাদ্দ কমে গেছে, নেই কেনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ঃ

বাজেটের আকার এবং মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি)-দুই হিসাবেই সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কর্মসূচী খাতে বাজেট বরাদ্দ এবার কমে গেছে।

প্রস্তাবিত ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী খাতে ২২ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সেন্টার ফর পলিসি পায়লগের (সিপিডি) বাজেট বিশ্লেষণ থেকে এসব বরাদ্দ তথ্য জানা যায়। এ অংক বাজেটের মোট আকারের ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং প্রাক্কলিত জিডিপির ২ দশমিক ১৮ শতাংশ।

তবে চলতি ২০১১-১২ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছিল বাজেটের ১৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং জিডিপির ২ দশমিক ৫১ শাতংশ।

আবার সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী খাতের ৪৩টি চলমান কর্মসূচিতে চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামীবারের জন্য বরাদ্দ কমানো হয়েছে। ১৩টি নতুন কর্মসূচি যুক্ত করা হয়েছে। তবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আগের ছয়টি কর্মসূচি।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচি ও কর্মসৃজন কর্মসূচি নামে দুটি ভাগ রয়েছে। আগামী অর্থবছরের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মোট বাজেটের ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাবদ মোট বরাদ্দের ৩০ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং জিডিপির শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ। এ বরাদ্দ চলতি অর্থবছরের মূল এবং সংশোধিত-উভয় বরাদ্দ থেকেই কম।

খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচির মধ্যে চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামীতে ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্টে (ভিজিডি) বরাদ্দের পরিমাণ ১৬ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী অর্থবছরে ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিংয়ের (ভিজিএফ) জন্য ১৫ শতাংশ এবং টেষ্ট রিলিফের (টিআর) জন্য ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ কম বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

আবার ১০টি বৃহৎ কমসৃজন কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে এক হাজার ৮১৮ কোটি টাকা। ন্যাশনাল সার্ভিসে এবারের বরাদ্দ ৩০৫ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে আগামীবারের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে ২২৮ কোটি টাকা। উত্তরাঞ্চলের অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসূচিতে চলতিবারের বরাদ্দ ১২ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে আগামীবারের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে সাত কোটি টাকা।

সামাজিক নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ খাত হওয়া সত্ত্বেও দেশে সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কেনো নীতিমালা নেই। ফলে যাথেচ্ছতাইভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি। সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ে প্রত্যেক সরকারেরই সৎইচ্ছা, যে কারণে সব সরকারই এ খাতে ভালো বরাদ্দ রাখে। রাজনৈতিকভাবে এগিয়ে থাকার জন্যও অনেক কর্মসূচি নেয় সরকারগুলো। কিন্তু দুঃখজনক যে শুধু নীতিমালার অভাবে কর্মসূচিগুলো থেকে দরিদ্র মানুষেরা তেমন একটা উপকৃত হতে পারে না।



৩.৪ নতুন কর্মসূচী গ্রহণ ২০১০-১১ঃ

২০১০-১১ অর্থবছরে গৃহীত কার্যক্রম ঃ

          সরকার বর্তমান অর্থবছরে দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে  সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি এর আওতায় বাস্তবায়নের জন্য ২০০৯-১০ অর্থবছরে অনুন্নয় খাতে গৃহীত কার্যক্রমসমূহ বাস্তবায়ন ছাড়াও চলতি অর্থবছরে (২০১০-১১) নি¤œলিখিত নতুন তহবিল গঠন করেছেঃ

       

ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুর্নবাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানঃ

ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে পূর্নবাসন এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্দেশ্য সরকার কর্তৃক সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় একটি নতুন তহবিল গঠন করা হয়েছে। ২০১০-১১ অর্থবছরে ৬.৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।


২০১০-১১ অর্থবছরে উন্নয়ন খাতে দারিদ্র বিমোচন বিষয়ে নতুন প্রকল্প ঃ

১.       অর্থনৈতিভাবে পশ্চাৎপদ এলাকার জনগনের দারিদ্র বিমোচন ও জীবিকা নিশ্চিতকরণ ( বরাদ্দ-১১ কোটি টাকা)

২.      সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে দারিদ্র নিরসন ( বরাদ্দ ১০৯.৭৩ কোটি টাকা )

৩.      ঋন,গমও ভুটার উন্œত বীজের উন্নয়ন ( বরাদ্দ ১০৯.৭৩ কোটি টাকা )

৪.      চৎড়সড়ঃরড়হ ড়ভ খবমধষ ধহফ ঝড়পরধষ ঊসঢ়ড়বিৎসবহঃ ( বরাদ্দ ২১.১৪ কোটি টাকা )


৪.২ ন্যাশনাল সার্ভিস কমৃসূচিঃ

তিন জেলার মধ্যেই আটকে আছে বর্তমান সরকারের বহুল আলোচিত ‘ন্যাশনাল সার্ভিস’ কমৃসূচির আওতায় কারা দেশের বেকারদের জন্য অস্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির কথা। কিন্তু সরকারের চার বছরেও গোপালগঞ্জ, কুড়িগ্রাম ও বরগনাতেই সীমাবব্ধ হয়ে আছে।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ যুবক ও যুব মহিলাদের দুই বছরের ন্যাশনাল সার্ভিসের আওতায় আনার কথা বলা হয়।

নিয়মানুযায়ী, ন্যাশনাল সার্ভিসে নিযুক্ত ব্যক্তিরা দুই বছরের জন্য দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অস্থায়ীভাবে চাকরি করেন। প্রতিদিনের জন্য তারা ২০০ টাকা করে পান। কর্মসূটির আওতায় তিন মানের প্রষিক্ষণ দিয়ে এ চকরি দেওয়া হয়।

আওযামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের এ কর্মসূচী বেকার সমাজের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি করলেও তা চার বছরের ও প্রত্যাশিত রুপ নেয়নি।

রংপুর বিভাগের সাত জেলার কুড়িগ্রাম মধ্যে আটটি উপজেলায় এই কর্মসূচি চালুর সিদ্ধান্ত হয়। এক বছরের বেশি সময় আগে এখনো তা শুরু হয় নি।

এই প্রেক্ষপটেই পর্যায়ক্রমে সারা দেশে এই কর্মসুচি চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। তিন জেলার চলমান কাজ মূল্যায়ন করার পর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটিকে এ মূল্যায়নের কাজ দেয়। মূল্যায়ন কাজের ওপর খসড়া প্রবিদেনটি চূড়ান্ত করার কাজ চলছে বলে যুব ও ক্রীয়া মন্ত্রণালয় ও যুব অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুব ও ক্রিড়া মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব নুর মোহাম্মদ ‘প্রথম আলো’ কে বলেন, রংপুর বিভাগে এই কর্মসূচি চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে । উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সময় চাওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীঢর সময় পাওয়া গেলে এই কাজ উদ্বোধন করা হবে।

২০১০ সালের মার্চ কুড়িগ্রাম, যে মাসে বরগুনা ও জুলাই মাসে গোপালগঞ্জে পরীক্ষামূলকভাবে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি চালু করা হয়। দুই বছর শেষে এখন সেখানে দ্বিতীয় পর্বের কাজ শুরু হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তরা জানান, গত অক্টোবর পর্যন্ত এই তিন জেলায় ৫৬ হাজার ৫৪ জনকে কর্মসংস্থানের জন্য সংযুক্ত করা হয়েছে। জেলা তিনটিতে কর্মসূচি শেষ হবে আগামি বছর। এ জন্য চলতিসহ চার অতর্হবছরে মোট ৭৬২ কোটি ৪১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৬৬৫ কেটি ৪ লাখ টাকা। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ন্যাশনাল সার্ভিসের আওয়তায় উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণদের আনাতে প্রস্তুত থাকেলও উল্লেখিত তিন জেলায় শুরুতে নূন্যতম মাধ্যমিক পাস নির্ধারণ করা হয়। বয়স নির্ধারণ করা হয় ১৮ থেকে ৩৫ বছর। একপর্যায়ে এই তিন জেলার জেলা প্রশাসকেরা (ডিসি) জানান, মাধ্রমিক উত্তীর্ণদের এই সুযোগ দেওয়ায় অনেকে পড়ালেখা বাদ দিয়ে অস্থায়ী ভিত্তিতে এই কাজের জন্য আসছেন। এতে তাদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। এ জন্য ডিসিরা প্রার্থীর বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্ত বাড়ানোর সুপারিশ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিসভা গত বছরের অক্টোবর মাসে ন্যাশনাল সার্ভিসের নীতিমালা সংশোধন করে নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চমাধ্যমিক এবং বয়স ২৪ থেকে ৩৫ বছর করার সুপারিশ করে। এ সময় রংপুর বিভাগের সাত জেলার আটটি উপজেলায় এই কর্মসূটি চালুর সিদ্ধান্তও হয়। উপজেলা গুলো হলোঃ

রংপুর জেলার কাউনিয়া ও পীরগঞ্জ, গাইবান্ধার ফুলছড়ি, নীলফামারীর ডিমলা, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা, দিনাজপুরের খানসামা, ঠাকুরগাওয়ের হরিপুর ও পঞ্চগরের সদর উপজেলা। কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো উপজেলা গুলোতে এই কর্মসুচি চালূ করা যাচ্ছে না। যুব মন্ত্রণালয়ের একটি সুত্র বলেছে, রংপুর বিভাগের জন্য যে টাকা বরাদ্দ ছিল তা কুড়িগ্রাম, বরগুনা ও গোপালগঞ্জে দেওয়া হয়।  যুব ও ক্রিয়া মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন রংপুর বিভাগে কর্মসূচি চালুর জন্য যুবকদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান, জরিপ ও দরখাস্ত যাচাই-বাছাই করে ১৬ হাজার ৩৬ জন যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রশিক্ষণের স্থান নির্ধারণ, শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কাজ-সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে এই কর্মসূচী উদ্বোধনের জন্য গত ৪ নভেম্বর একটি সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে।  সুত্রমতে এ কর্মসূচিতে রংপুর বিভাগের জন্য ২০১১-১২ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিলো ১০০ কোটি টাকা। আর ২০১১-১২ অর্থবছরে রবাদ্দ রাখা হয়েছে ১৮৫ কোটি টাকা।এদিকে কর্মসূচির মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এর কলেরব বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছ্ েযুব ও ক্রিয়া মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের সংশ্øিষ্ট কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া কুড়িগ্রাম, বরগুনা ও গোপালগঞ্জের কার্যক্রম বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়, খসরা মূল্যায়ন প্রতিবেদন ও কর্মূচিকে “অনুকরণীয়” হিসেবে উল্লেখ করে পর্যায়ক্রমে তা সব জেলায় চালুর সুপারিশ করা হয়। প্রতিবেদনে দারিদ্র্যের হার বিবেচনা করে জেলা বেছে নিয়ে পর্যাক্রমে আগামী ১০ বছরের মধ্যে সব জেলায় এ কর্মসূচী চালূর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ জন্য বাজেট বাড়ানোর ও সুপারিশ করা হযেছে। প্রতিবেদনে প্রশিক্ষণের ওপরও জোর দেয়া হয়েছে।

[ প্রথম আলো, রোববার, ৯ ডিসেম্বর ২০১২]


৪.১ তথ্য উপাত্তঃ

তথ্য উপাত্তঃপ্রোগ্রামের নাম
  

প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য
  

উপকারভোগীদের বৈশিষ্ট্য
  

অর্থনৈতিক লাভ
  

মোট উপকারভোগী

প্রাথমিক শিক্ষা বৃত্তি প্রকল্প
  

প্রাকৃতির দুর্যোগের কারনে একটি সুনির্দিষ্ট ধারনার লক্ষ্য নির্ধারন করে মজি  করা হয়।

* দরিদ্র পরিবারের শিশুদের স্কুলের অন্তর্ভূক্তির পরিমাণ বাড়ানো, স্কুল হতে ঝরে পরা শিশুদের হার কমানো।

* প্রামমিক শিক্ষা সমাপ্ত করার হার বাড়ানো।

* শিশু শ্রম দমানো এবং দারিদ্রতা ক্রমে    হ্রাস করা।

* প্রাথমিক শিক্ষার গুণগতমান বাড়ানো।
  

* বিধবা, ডিভোসী, স্বামী পরিত্যক্তা এমন নারী প্রধান পরিবার নির্বাচিত করা।

* পরিবার প্রধানের প্রধান পেশা দৈনিক মজুর।

* নিম্ন আয়ের পরিবার যেমন জেলে, মৃৎশিল্পী, কামার, তাতীঁ ইত্যাদি।

* ভূমিহীন অথবা ৫০ শতাংশের নীচে জমি।


  

১০০ টাকা(প্রতি পরিবারে ১ জন ছাত্রী)

১২৫ টাকা টাকা(প্রতি পরিবারে ১  জনের অধিক ছাত্রী

টাকা উপকারভোগী ছাত্রীদেও অভিভাবকের কাছে ব্যাংকের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয় ।
  

প্রতি বছর ৫.৩ মিলিয়ন উপকারভোগী

মাধ্যমিক স্কুল ছাত্রী শিক্ষা সহায়তা প্রকল্প
  

মাধ্যমিক স্কুলে ছাত্রী সংখ্যা বাড়ানো।

* ছাত্রীদের সুনির্ভর করা।

* বাল্যবিবাহ রোধ করা।


  

সকল তাবিলহিত মেয়ে শিশু যারা স্বীকৃত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ে।


  

বৃত্তি ৬ষ্ঠ শ্রেণী ৩০০ টাকা,৭ম শ্রেণী ৩৬০ টাকা,৮ম শ্রেণী ৪২০ টাকা,৯বম শ্রেণী ও ১০ম শ্রেণী ৭২০ টাকা।

বেতন ফ্রি

পরীক্ষা ফি ফ্রি

বই ফ্রি

টাকা উপকারভোগী ছাত্রীদেও অভিভাবকের কাছে ব্যাংকের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়।
  

৪ লক্ষ্যেও উপর উপকারভোগী

ভিজিডি
  

* নারীদের সুনির্দিষ্ট দক্ষতা বাড়ানো, সঞ্চয় বৃদ্ধি করা এবং ঋণের সুযোগ বাড়ানো।

* দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা  অপুষ্টির উপর সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা।


  

০.১৫ একরের নীচে মোট জমি এমন পরিবার।

* মাসিক মাথাপিছু আয় ৩০০ টাকার নীচে এক ঋতুভিত্তিক কাজের সুযোগ রয়েছে।

* উৎপাদনক্ষম নারীরা (৮১-৪৯)

* দৈনিক মজুর বা ---- শ্রমিক।

* উৎপাদনশীল সম্পদ নেই এমন পরিবার।


  

প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে গম পাবেন ।

প্রশিক্ষণ ১৫০ ঘন্টা

উপকারভোগীরা ২৪ মাস কাজ শেষ করার পর ব্রাক থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন ।
  

৫ লক্ষ উপকারভোগী

কাজের বিনিময়ে খাদ্য
  

* মুল্ক মৌসুমে অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা।

* শ্রমিক অবকাঠামো ব্যবস্থাপনা করা।


  

* ভূমিহীন পরিবার।

* উৎপাদনশীল নারী প্রধান পরিবার যারা বিধবা।

* মাসিক আয় ৩০০ টাকা বা তার নীচে।


  

কোন সুর্নিদিষ্ট প্যাকেজ নেই ।
  

বছওে প্রায় ১ লক্ষ উপকারভোগী

আর এম পি
  

* নারীদের স্বাবলম্বী করা।

* গ্রামীণ অবকাঠামো ব্যবস্থাপনা করা।

* দুর্যোগ আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর দুর্ভোগ কমানো।

* ক্ষুদ্র ব্যবসা করার জন্য ঋণের ব্যবস্থা করা।


  

জমির পরিাণ ৩০ শতাংশ বা তার কম।

* পারিবারিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ।

* নারী প্রধান পরিবার ও নারীর বয়স ১৮-৩৫ বছর।

* বিধবা বা পরিত্যক্তা নারী কমপক্ষে একবছর পূর্বে হয়েছে এমন নারী এবং পদের উপর নির্ভরশীললতা।

* অন্য কোন আয়ের সুযোগ নেই এবং অন্য কোন কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত নেই।
  

৫১ টাকা প্রতি দিন

ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা হস্তান্তর করা হয় ।
  

বছরে প্রায় ৪২ হাজার উপকারভোগী

টেষ্ট রিলিফ
  

* বর্ষাকালে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা।

* র্দুযোগ আক্রান্তদের জন্য জরুরী সল্পমেয়াদী রিলিফ যেমন-খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তৈজসপত্র সরবরাহ করে ।
  

* সাধারনত একটি নির্দিষ্ট স্থানের জন্য প্রযোজ্য।


  

প্রতি দিন ৫ থেকে ৬ কেজি করে গম পাবেন
  

১ লক্ষ উপকারভোগী

বয়স্ক ভাতা
  

অসহায় নারীদের অর্থ হস্তান্তরের মাধ্যমে সহযোগিতা করা।


  

নূন্যতম ৬৫ বছর বয়স।

* বাৎসরিক ঋণদান ২০০০ টাকার বেশি নয়।

* সাধারণ কাজের সাথে যুক্ত নয়।

* ইউনিয়নের কামাঠো, বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী উপকারভোগী সনাক্তকৃত হয়।

* ৫০ শতাংশ নারী এবং ৫০ শতাংশ পুরুষ।
  

১৬৫ টাকা প্রতি মাসে

ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা হস্তান্তর করা হয় ।
  

বছরে ১২ লক্ষ উপকারভোগী

ভিজিএফ
  

*র্দুযোগ সংক্রান্ত জরুরী চাহিদা

*র্দুযোগ আক্রান্তদের জন্য জরুরী সল্পমেয়াদী রিলিফ
  

প্রাকৃতির দুর্যোগের কারণে একটি সুনির্দিষ্ট জারনার লক্ষ্য নির্ধারণ করে মর্জি  করা হয়।

* দরিদ্র পরিবারের শিশুদের স্কুলের অর্ন্তভূক্তির পরিমাণ বাড়ানো, স্কুল হতে ঝরে পরা শিশুদের হার কমানো।

* প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করার হার বাড়ানো।

* শিশু শ্রম দমানো এবং দারিদ্রতা ক্রমে করা।

* প্রাথমিক শিক্ষার গুণগতমান বাড়ানো।


  

কোন সুর্নিদিষ্ট প্যাকেজ নেই ।
  

২ লক্ষ ৪০ হাজার উপকারভোগী

জিআর
  

* প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে একটি সুনির্দিষ্ট জারনার লক্ষ্য নির্ধারন করে মজি  কর হয়।

* দরিদ্র পরিবারের শিশুদের স্কুলের অর্ন্তভূক্তির পরিমাণ বাড়ানো, স্কুল হতে ঝরে পরা শিশুদের হার কমানো।

* প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করার হার বাড়ানো।

* শিশু শ্রম দমানো এবং দারিদ্রতা ক্রমে করা।


  

*সাধারণত একটি নির্দিষ্ট স্থানের বা লক্ষ্যের জন্য প্রযোজ্য।
  

কোন সুর্নিদিষ্ট প্যাকেজ নেই ।
  

৩০ লক্ষ উপকারভোগী

র্দুযোগঝুকি হ্রাস তহবিল
  

* সাধারণত একটি নির্দিষ্ট স্থানের জন্য যেখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়েছে ।


  

* মাধ্যমিক স্কুলে ছাত্রী সংখ্যা বাড়ানো।

* ছাত্রীদের সুনির্ভর করা।

* বাল্যবিবাহ রোধ করা।
  

৫ শতাংশ সার্ভিস র্চাজ হারে ৫০০০ টাকা থেকে ২৫০০০ টাকা ৩ বছর মেয়াদী ঋণ গ্রহণ করতে পারবে ।
  

বছওে ১কোটি ৫০ লক্ষ উপকারভোগী

বিধবা ভাতা
  

অসহায় নারীদের অর্থ হস্তান্তরের মাধ্যমে সহযোগিতা করা।


  

বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত ও স্বামী পরিত্যক্তা নারী।

* ইউনিয়নের ---- বৈশিষ্ট অনুযায়ী উপকারভোগীর সংখ্যা নিধারণ করা হয়।
  


  


মুক্তিযোদ্ধা ভাতা
  

দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধাদের অর্থ সহযোগিতা করা।


  

সনাক্তকৃত দুস্থ্য মুক্তিযোদ্ধারা।

* বাৎসরিক আয় ৬০০০ টাকার নীচে।

* শারিরীকভাবে আংশিক বা সম্পূর্ণ অক্ষম, ভূমিহীন বা কর্মহীন মুক্তিযোদ্ধা বা পরিবারে নির্ভরশীল কেউ নাই এমন।
  


  


গৃহায়ন তহবিল
  

গৃহহীন ও নিম্ন আয়ের মানুষের গৃহায়ন সমস্যা দূর করা।


  

গ্রামীণ নিম্ন আয়, ভূমিহীন পরিবার।

* দুযোগ আক্রান্ত বা ক্ষতিগ্রস্থ।

* ৫ শতাংশ সুদ প্রদানে সক্ষম।
  

২০০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ ।
  


এসিড দগ্ধ ও শারিরীক প্রতিবন্ধীদেও পুর্নবাসন তহবিল
  

* এসিড দগ্ধ নারীদের ঋণ ও কারিগরী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহযোগিতা করা।

* ওএঅ এর সুযোগ বাড়ানো।

* সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো।
  

ঘটনার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা





  

ক. প্রশিক্ষণ

খ.ঋণ
  





গ্রন্থপঞ্জি

১.       প্রফেসর ইয়াসমিন আহমেদ,  বাংলাদেশের রাজনৈতিক অর্থনীতি, ঢাকা।

২.      মোঃ সালাহ্ উদ্দিন শেখ,  বাংলাদেশের রাজনৈতিক অর্থনীতি, ঢাকা।

৩.      মঞ্জর  মোরশেদ,  বাংলাদেশ অর্থনীতি, ঢাকা।

৪.      প্রথম আলো, রোববার, ৯ ডিসেম্বর ২০১২।

৫.      আনিসুর রহমান, বাংলাদেশের অর্থনীতি।

৬.      সৈয়দ আকমল মাহমুদ, বাংলাদেশের অর্থনীতি।



1 comments:

  1. ভাই এই টা কেমন টার্ম পেপার করলেন? বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিটেন্স এর ভূমিকা , আপনি যা দিলেন , সেটা কি আপনার মন গড়া? এগুলি তো দোকা দিলেন ।

    ReplyDelete